Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ছবি
শিরোনাম
লাঙ্গলবন্দ পুন্যস্নান উৎসবে পূন্যাথীদের একাংশ।
বিস্তারিত

পুণ্যস্নান
(তীর্থযাত্রা পশুবলির আত্মতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ)
(The theosophical analysis of Pilgrimage or Immolation) “التحليل لاهوتيا من الحج أو الذبح- الفصل الرابع” (আত্তাহলিল লাহুতিয়ান মিন আলহাজ্‌ব আও আজ্জাবহা- আলফাসলু আররাবি)

আবহমানকাল হতেই বাংভারতীয় উপমহাদেশে তীর্থযাত্রা ও পশুবলি এবং এর প্রাসঙ্গিকতায় নিষ্কামিতা, তীর্থস্নান ও তীর্থবারি পরিভাষাগুলো শাস্ত্রীয়, পারম্পরিক ও মরমী অঙ্গনে দেখতে-শুনতে পাওয়া যায়। কিন্তু এসবের তত্ত্ব ও তাত্ত্বিকতা জানতে ও বুঝতে চাইলে সঠিকভাবে জানা ও বুঝার মাধ্যম একেবারেই নেই বললেও ভুল হবে না। কী শাস্ত্রিক, কী পারম্পরিক, কী মরমী, কী পাঠাগার, কী সাধনগৃহ (মন্দির ও মঠ) এবং কিবা গ্রন্থ-গ্রন্থিকা। কোথাও সঠিক সমাধান মিলে না। তবে ইদানিং Internet search করে যতটুকু পাওয়া যায় browser-রা দেখে নিতে পারেন। কিন্তু সাধারণ মানুষ ইচ্ছে করলেও এসবের বর্ণনা-বিবরণ সহজে জানতে ও বুঝতে পারে না। তাই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। ওপরোক্ত বিষয়গুলোকে ১.তীর্থযাত্রা ২.পশুবলি ৩.নিষ্কামিতা ৪.পুণ্যস্নান ও ৫.তীর্থবারি- এ ৫টি পৃথক পৃথক পর্বে বিভক্ত করে আলোচনা তুলে ধরতে চেষ্টা করছি।
————————————————————————————————————————
পুণ্যস্নান
Ablution (এ্যাবলুশন)/ ‘الوضوء’ (আলওয়াদুউ)
স্নান মানুষের প্রত্যাহিক আবশ্যকীয় কাজ। প্রত্যেক মানুষ বাড়িতে প্রায় প্রতিদিনই স্নান করে থাকেন। তারপরও তীর্থে গিয়ে স্নান করা কী ভিন্ন কিছু। এমন প্রশ্নের উত্তরে এরূপ বলা যায় যে, শাস্ত্রীয়রা মনে করে তীর্থের জল অতি পবিত্র। তীর্থজল বা তীর্থোদক পান করলে যেমন একদিকে ক্ষুধা নিবারণ হয় অন্যদিকে পাপমোচন হয়। শাস্ত্রীয়রা আরো মনে করে তীর্থবারি বা তীর্থোদক দ্বারা স্নান করলে মানুষ সদ্যপ্রসূত শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। তাই অধিকাংশ তীর্থযাত্রী যার যার তীর্থধামে গিয়ে তীর্থকর্ম করার ফাঁকে ফাঁকে তীর্থোদক দ্বারা স্নানও করে থাকে। এখানে তীর্থ বলতে যার যার প্রিয়ধাম বুঝানো হয়েছে। যেমন- পুরাণীদের তীর্থধাম গয়া, কাশী, পুরী, নবদ্বীপ ও বৃন্দাবন। কুরানীদের তীর্থধাম বলতে মক্কা, মদিনা, জেরুজালেম ও কারবালা। ইঞ্জিলীদের তীর্থধাম জর্ডান।

এটি রূপক সাহিত্যের বৈক্তিকসদস্য সারণির কাম’ পরিবারের অন্যতম একটি সহযোগীমূলক’ পরিভাষা। এর প্রকৃতমূলক সঙ্গম’, রূপান্তরিতমূলক সদস্য কাম’, রূপক পরিভাষা উপাসনা’, উপমান পরিভাষা পূজা যজ্ঞ’ এবং ছদ্মনাম পরিভাষা তাপন, পাশাখেলা বাইচালি’

পুণ্যস্নান (রূপ)বি পবিত্র জলে অবগাহন, Ablution (এ্যাবলুশন), ‘الوضوء’ (আলওয়াদুউ), Exoneration (এক্সোনেরেশন), ‘تبرئة’ (তাবরিয়া) (প্র) পুরাণী মনীষীদের মতে শাস্ত্রীয় কর্মের অংশরূপে অতীত পাপমোচন করার উদ্দেশ্যে পবিত্র জলে অবগাহন বিশেষ (আবি)বি অক্ষক্রীড়া, কাম, কামকেলি, কেলি, নিত্যকর্ম, ভ্রমণ, পর্যটন, পাশাখেলা, বপ্রক্রীড়া, বপ্রকেলি, বপ্রক্রিয়া, বাইচালি, journey (জার্নি) (ভাঅ)বি গমন, মিলন, মৈথুন, সঙ্গম, সম্ভোগ, lust, sexual intercours, ‘شهوة’ (শাহওয়া), ‘.ﻭﻄﻰ’ (ওয়াত্বিউ), ‘.ﺠﻤﺎﻉ’ (জিমাউ), ‘.ﻟﻮﺍﻄﺔ’ (লাওয়াত্বাত) (অশি)বি চুদ, চুদন, চুদা (আঞ্চ)ক্রি করা, লাগানো, গুয়ানো (ইপ)বি prayer, rape, copulation (আপ)বি ‘ﻋﺑﺎﺪﺖ’ (ইবাদত), ‘ﺻﻠﻮﺓ’ (সালাত), ‘ফা.ﺒﻧﺪﮔﻰ’ (বন্দেগি) (দেপ্র) এটি রূপক সাহিত্যের বৈক্তিকসদস্য সারণির কাম’ পরিবারের সহযোগীমূলক’ পরিভাষা ও রূপক সাহিত্যের একটি পরিভাষা বিশেষ (সংজ্ঞা) ১.শাস্ত্রীয় কর্মের অংশরূপে অতীত পাপমোচন করার উদ্দেশ্যে তীর্থধামের পবিত্র জল দ্বারা স্নান করা বা নাওয়াকে পুণ্যস্নান বলা হয় ২.রূপক সাহিত্যে পুরুষ-নারীর সঙ্গমকে রূপকার্থে পুণ্যস্নান বলা হয় (ছনা)বি তাপন, পাশাখেলা ও বাইচালি (উপ)বি পূজা ও যজ্ঞ (রূ)বি উপাসনা (দেত)বি কাম {বাং.পুণ্য+ বাং.স্নান}

পুণ্যস্নানের ওপর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ধৃতি
(Some highly important quotations of Ablution)
১. “একে সে প্রেমনদীর জলে, থাই মিলে না নোঙর ফেলে, বেঁহুশ হয়ে নাইতে গেলে, কামকুম্ভিরে খায়।” (পবিত্র লালন- ৪২৮/৩)। (মুখঃ- “গৌরপ্রেম অথায়, আমি ঝাঁপ দিয়ে চিতায়, এখন আমার প্রাণ বাঁচান ভার, করি কী উপায়”)
২. “ঘাটের সে পঞ্চনারী, বসে আছে খড়গ ধরি, হঠাৎ করে নাইতে গেলে তারি, এক কোবে ছেদন করে।” (পবিত্র লালন- ৯৫২/৩)(মুখঃ- “সুখ-সাগরের ঘাটে গিয়ে, মৎস্য ধর হুঁশিয়ারে, জল ছুঁয়ো না মনরসনা, বলি তোমায় বারে বারে”)
৩. “ডুব না জেনে ডুব দিতে গিয়ে, কতজনা প্রাণ হারায়, প্রেমযমুনায় নাইতে গিয়ে, ডুবে মরিল ডাঙ্গায়।” (বলন তত্ত্বাবলী- ১২৬)
৪. “নাইতে এলাম সুরেশ্বরের প্রেমনদীতে, গামছা নিলো চিকনকালা, কলসী নেয় স্রোতে।” (গীতিকার কামেস)

পুণ্যস্নানের সংজ্ঞা (Definition of Ablution)
শাস্ত্রীয় কর্মের অংশরূপে অতীত পাপমোচন করার উদ্দেশ্যে পবিত্র জলে অবগাহন করা বা নাওয়াকে পুণ্যস্নান বলে।
পুণ্যস্নানের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞা (Theosophical definition of Ablution)
রূপক সাহিত্যে পুরুষ-নারীর সঙ্গমকে রূপকার্থে পুণ্যস্নান বলে।

পুণ্যস্নানের প্রকারভেদ (Classification of Ablution)
পুণ্যস্নান দুই প্রকার। যথা- ১.উপমান পুণ্যস্নান ও ২.উপমিত পুণ্যস্নান।
১. উপমান পুণ্যস্নান (Analogical Ablution)
শাস্ত্রীয় কর্মের অংশরূপে অতীত পাপমোচন করার উদ্দেশ্যে পবিত্র জলে অবগাহন করা বা নাওয়াকে উপমান পুণ্যস্নান বলে।
২. উপমিত পুণ্যস্নান (Compared Ablution)
রূপক সাহিত্যে পুরুষ-নারীর সঙ্গমকে উপমিত পুণ্যস্নান বলে।

পুণ্যস্নানের পরিচয় (Identity of Ablution)
স্নান, সূর্যস্নান, জ্যোৎস্নাস্নান ও রক্তস্নান এবং ঋতুস্নান, গঙ্গাস্নান ও পুণ্যস্নান। সবই স্নান কিন্তু পার্থক্য হলো সূর্যস্নান ও জ্যোৎস্নাস্নান হচ্ছে আয়ুর্বেদিক। রক্তস্নান হচ্ছে রাজনৈতিক এবং ঋতুস্নান, গঙ্গাস্নান ও পুণ্যস্নান হচ্ছে শাস্ত্রীয়। এখানে আমরা পুণ্যস্নান নিয়ে আলোচনা করতে চাই। সাধারণত যে কোন পবিত্র জল দ্বারা অবগাহন করাকে পুণ্যস্নান বলা হয়। তীর্থযাত্রী বা পুণ্যার্থীরা একান্ত আবেগ আপ্লুত হয়েই স্বস্ব শাস্ত্রীয় পবিত্র জলে অবগাহন করে থাকে। কোন তীর্থের উপকণ্ঠের দীঘির জল পবিত্র বলে মনে করা হয়। কোন তীর্থের কূপের জলকে পবিত্র বলে মনে করা হয়। কোন তীর্থের বিল, হাওর, খাল, নদী বা সাগরের জলকে পবিত্র বলে মনে করা হয়। যেসব পাহাড়ী তীর্থে জলের প্রাকৃতিক কোন উৎসের ব্যবস্থা নেই সেখানে কৃত্রিম ফোয়ারা বা ঝর্ণা নির্মাণ করা হয়েছে। তীর্থযাত্রী বা পুণ্যার্থীরা সেসব তীর্থের উক্ত কৃত্রিম ফোয়ারাকেই পবিত্র জল বলে মনে করে থাকে। আবার কোথাও কোথাও এমনও দেখা যায় যে, পূর্বকালে নদী, খাল ও দীঘি ছিল কিন্তু এখন সেসবের নাব্যতা বা গভীরতা নেই। তবু পুণ্যার্থীরা সেসবের কাদামাখা বা ঘোলাজলেই স্নান করে থাকে।

কাল্পনিকদর্শন (Mythosphilosophy) বা কাল্পনিকতত্ত্ব (Mythology)
নারায়ণগঞ্জের নাঙ্গলবন্দ। প্রতিবছর বঙ্গাব্দের চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে অর্থ্যাৎ মহা-অষ্টমীতে নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে অসংখ্য পুণ্যার্থী পুণ্যস্নান করতে আসেন। কিন্তু এখন এ নদের নাব্যতা না থাকায় পুণ্যার্থীরা ঐ ঘোলাজলা বা কাদাজলেই পুণ্যস্নান করে থাকেন।

কারণ সনাতনী বা পুরাণীরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, এ নদে পুণ্যস্নান করতে পারলে অতীতের সব পাপ ধুয়ে মানুষ শুদ্ধ হয়। এমনিভাবে কুরানীরা মক্কায় গিয়ে জমজমের জল পান ও স্নান করেন। ইঞ্জিলীরা জর্ডানে গিয়ে পুণ্যস্নান করেন। অর্থাৎ প্রত্যেক সম্প্রদায়ের লোকজন স্বস্ব শাস্ত্রীয় পবিত্র জল বা তীর্থস্থানের পবিত্র জল দ্বারা স্বস্ব শাস্ত্রীয় বিধান অনুযায়ী এই পুণ্যস্নান করে থাকেন।

লাঙ্গলবন্দের ব্রহ্মপুত্র নদে পুণ্যস্নান করা ব্যাপারে কথিত আছে- এ নদের জল পুরাণোক্ত পরশুরাম মুনিকে পাপমুক্ত করেছিল। অন্যদিকে মহাভারতের বর্ণনা অনুযায়ী ব্রহ্মপুত্র নদের যে স্থানে স্নান করে পরশুরাম মুনি পাপমুক্ত হয়েছিলেন বর্তমানে সেটি নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে অবস্থিত। এ বিশ্বাস নিয়েই পুরাণীরা ব্রহ্মার সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে এখানে স্নান করতে আসেন। পুরাণোক্ত পরশুরাম মুনির পাপমুক্তির কথা স্মরণ করেই কয়েক শত বছর ধরে পুরাণীরা অষ্টমী-পুণ্যস্নান উদ্যাপন করে আসছেন। এছাড়াও ধলেশ্বরী, চিলমারি, সুরমা, পদ্মা ও যমনা নদিতেও বর্তমানে পুণ্যস্নান প্রথার প্রচলন আরম্ভ হয়েছে।

আত্মদর্শন (Theosophy) বা আত্মতত্ত্ব (Theology)
বড় অবাক হবার বিষয় হলো পুরাণোক্ত পুরশুরাম মুনিইবা কে এবং ব্রহ্মপুত্র নদইবা কী? পুরাণীরা এর সঠিক অন্বেষণ না করে দীর্ঘদিন হতে এ পুণ্যস্নান করে আসছেন। এখন এটি পুরাণীদের শাস্ত্রীয় সংস্কারের রূপলাভ করেছে। এটি কারো অস্বীকার করার উপায় নেই। আর কিছু দিনের মধ্যে এই পুণ্যস্নান জাতি ও সম্প্রদায় ভেদাভেদ ছাড়িয়ে বাঙালী সংস্কৃতির রূপলাভ করবে।

সাধারণত পরশু অর্থ কুঠার। রূপক সাহিত্যে ভৃগুকে উপমার্থে বলা হয় কুঠার, পরশু ও তলোয়ার। একে কাঠঠোকরাও বলা হয়। কুরানে একে ‘ﻫﺩﻫﺩ’ (হুদহুদ) বলা হয়েছে। আর Greek mythology তে (গ্রিক মিথোলজি) একে Hoopoe (হুপী) বলা হয়েছে। পুরাণোক্ত ভৃগুমুনির অন্য নাম পরশুরাম। ভৃগুমুনি, পরশুরাম, ‘ﻫﺩﻫﺩ’ (হুদহুদ) ও Hoopoe (হুপী) এসব চারিত্রিক পরিভাষা দ্বারা দেহতত্ত্বে কেবল ভৃগুকে বুঝায়। আর ভৃগু হচ্ছে জরায়ুমুখের ছদ্মনাম। কামযজ্ঞ আরম্ভ করলে শিশ্নের মাথায় ক্রমান্বয়ে ঠুকরিয়ে ঠুকরিয়ে শিশ্ন হতে শুক্র ছিনিয়ে নেয়। আর ঐ শুক্র হতে পুনরায় সৃষ্টি করে ঐ জীব। গোরুর ক্ষেত্রে গোরু, ছাগলের ক্ষেত্রে ছাগল ও মানুষের ক্ষেত্রে মানুষ। মানুষ ধরলে- মানুষ হতে মানুষ কাটে, গোরু ধরলে- গোরু হতে গোরু কাটে এবং ছাগল ধরলে- ছাগল হতে ছাগল কাটে। জীব হতে শুক্র কেটে নিয়ে গিয়ে আবার জীব সৃষ্টি করে বলেই ভৃগুকে পরশু বা কুঠার বলা হয়। পরশু বা কুঠার যেমন কাঠ-বাঁশ কাটে ভৃগুও তেমন জীব-প্রাণী কাটে। তাই এর এরূপ নামকরণ করা হয়েছে।

অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র হচ্ছে স্বয়ং বৈতরণী। অর্থাৎ বৈতরণীর অন্য নাম ব্রহ্মপুত্র। যে স্রোতধারা হতে স্রোত বের হয়ে যায় কিন্তু অন্য কোন স্রোত প্রবেশ করে না তাকে ভূ-বিজ্ঞানে নদ বলে। অন্যদিকে যে স্রোতধারা হতে শাখা-প্রশাখা বেরও হয় আবার অন্য স্রোত প্রবেশও করে তাকে নদী বলা হয়। আমরা যদি স্বর্গীয় বৈতরণী নদের কথা ধরি তবে দেখা যায় এখান থেকে কামরস, সুধা ও মধু কেবল বের হয় কিন্তু অন্য কোন ধারা এখানে প্রবেশ করে না। কেউ যদি মনে করে শুক্র প্রবেশ করে তবে তা ভুল। শুক্র সাময়িক প্রবেশ করে আবার সন্তান আকারে বের হয়ে যায়। তাই এ ধারাকে ধারা প্রবেশ ধরা যায় না। এসব কারণে বৈতরণী, গয়া, ফল্গু, বিরজা, সুরধুনী ও ব্রহ্মপুত্রকে সর্বদা নদ বলা হয়। এ স্বর্গীয় নদের এক প্রান্তে অবস্থিত ভগ অন্য প্রান্তে অবস্থিত ভৃগু। সাধারণ এ নদে স্বর্গীয় গরমজল বা কামরস প্রবাহিত হয়ে থাকে। তাতে সাধকের মুক্তি মিলে না। তবে যেদিন এ নদে সুধা বা মধু প্রবাহিত হয় সেদিন সাধক মুক্তিলাভ করে থাকে। রূপক সাহিত্যে তাই বলা হয়েছে- এ নদের জলে অবগাহণ বা স্নান করে মহামুনি পরশুরাম মুক্তিলাভ করেছেন।

অন্যদিকে রূপক সাহিত্যে সাধারণত সর্ব প্রকার কামকেই স্নান বা গাহণ বলা হয়। কিন্তু এখানে কামকে পুণ্যস্নান বলা হয়েছে কেন? এরূপ প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে যে স্নানে পুণ্যলাভ হয় তাকেই পুণ্যস্নান বলা হয়। বৈতরণীরূপ নদে কামযজ্ঞ করে যেদিন অমৃত জলের সন্ধানলাভ হয় তাকেই পুণ্যস্নান বলা হয়। এক কথায় স্বরূপ দর্শন হয় যে স্নানে তা-ই পুণ্যস্নান। পরিশেষে বলা যায় রূপক সাহিত্যে বর্ণিত মহামুনি পরশুরাম হচ্ছে জরায়ুমুখ, ব্রহ্মপুত্র নদ হচ্ছে জননপথ এবং যে কামযজ্ঞে অমৃত মানবজল আহরিত হয় তা-ই পুণ্যস্নান। রূপক সাহিত্যের জ্ঞান না থাকার কারণেই সাধারণ মানুষের বোধগম্যে আসে না এসব আত্মতাত্ত্বিক বিষয়।